নিরাময়যোগ্য নয় বরং নিয়ন্ত্রণই বেঁচে থাকার একমাত্র পথ; এমন ভুল তথ্য মানুষের মাঝে ছড়িয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে রোগী হিসাবে পুষে রাখছে। ডাক্তারদের কথায় বিশ্বাস করে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীরা ওষুধ খেয়ে ইনসুলিন নিয়ে নিজেকে আরো বড় রোগীতে পরিণত করছেন। ধীরে ধীরে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (চোখের সমস্যা), ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি (কিডনি সমস্যা), ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি (স্নায়ু সমস্যা), হৃদরোগ, স্ট্রোক ও পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD)-এ আক্রান্ত হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন পর মৃত্যুবরণ করছে।
অথচ লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনে সঠিক পদ্ধতিতে জীবনযাপন করলে মাত্র ৭ দিনেই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি লাইফস্টাইল ও ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত সকল রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকার
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি উপায় জানার আগে জানতে হবে আপনি কোন ধরণের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিস প্রধাণত দুই প্রকার, দুই প্রকার ডায়াবেটিসের কারণও দুই রকম! চলুন প্রথমে ডায়াবেটিসের ধরণ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস:
মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা (IMMUNE SYSTEM) ভুলবশত প্যানক্রিয়াসের ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষগুলো ধ্বংস করে ফেললে শরীরে ইনসুলিনের শূন্যতা বা স্বল্পতা অর্থাৎ টাইপ ১ ডায়াবেটিস দেখা দেয়। ইনসুলিন যেহেতু আমাদের গ্রহণ করা শর্করাজাতীয় খাবার থেকে সৃষ্ট গ্লুকোজ রক্ত থেকে কোষে পৌঁছে দেয় সুতরাং টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে তাদের রক্তেও গ্লুকোজ বা সুগারের মাত্র বেশি দেখা দেয়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ওজন সাধারণত বাড়ে না ও পেশি গঠিত হয় না এবং অল্প বয়স থেকেই সাধারণত এই রোগ দেখা দেয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস:
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ রোগী টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মূল কারণ কোষের ওভারলোড। দিনের পর দিন অতিরিক্ত খাওয়া ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ফলে কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমে কোষ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কোষে ইনসুলিন রক্তের সুগার বা গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করাতে গেলে কোষ বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করতে শরীর অতিরিক্ত ইনসুলিন উৎপাদন করে কোষে জোরপূর্বক সুগার বা গ্লুকোজ প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে। ফলে রক্তে সুগার ও ইনসুলিন উভয়ের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যায়, আর এই অবস্থাকেই মূলত টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলা হয়।
বিশ্বজুড়ে মহামারী আকার ধারণ করা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ রোগীর রোগমুক্তির পথও খুবই সহজ, কিন্তু আমরা অজ্ঞতার ফলে এই রোগ পুষে আমাদের শরীরে আরো অনেক রোগ প্রবেশের পথ করে দিচ্ছি। অথচ আমরা চাইলেই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শিকড় উপড়ে ফেলে আমরা ওষুধ ও ইনসুলিনমুক্ত সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।
ডায়াবেটিস চেনার উপায়
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ওজন সাধান মানুষের তুলনায় কম হয়ে থাকে, অপরদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ওজন তুলনামূলক স্বাভাবিক থেকে বেশি হয়ে থাকে।
তাছাড়াও প্যাথলজিক্যাল টেস্টের মাধ্যমে আপনি কোন প্রকার ডায়াবেটিস আক্রান্ত নিশ্চিত হতে সি-পেপটাইড (C-peptide) করুন। সি-পেপটাইড (C-peptide) করার মাধ্যমে জানা যায় শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনের সক্ষমতা, সাধারণত টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ইনসুলিন উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম হয়ে থাকে, অপরদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন করতে বাধ্য হয়।
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়
ইতিমধ্যে আমরা টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মূল কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। আর কারণ জানার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পেরেছি টাইপ টু ডায়াবেটিসের মূল কারণ যেহেতু কোষে ওভারলোড সেহেতু কোষ খালি করে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থেকে মুক্ত হতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সাথে আরো অসংখ্য লাইফস্টাইল ঘটিত রোগ থেকে থেকেও সম্পূর্ণ মুক্ত হওয়া সম্ভব।
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কোষে খালি করা বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স মুক্ত হওয়া কি সহজ কাজ?
একথার সহজ উত্তর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বেশি বেশি খাওয়ার অভ্যাস, পরিশ্রম না করা, পর্যাপ্ত না ঘুমানো, দুশ্চিন্তা থেকে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের এই মূল কারণ গুলো ছাড়তে পারলে এবং জেকে লাইফস্টাইলের প্রধান ৫ টি শর্ত যেমন : স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অটোফেজি বা রোজা, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক প্রশান্তি চর্চা করলে আপনি দ্রুতই ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থেকে মুক্তি পেতে পারবেন আর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থেকে মুক্তি পেলে আপনি টাইপ ২ ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।
পূর্ণাঙ্গ পরামর্শ ও সেবা নেয়ার উপায়
শুধুমাত্র ডা. জাহাঙ্গীর কবীর স্যারের ভিডিও দেখে দেশ ও বিদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেয়েছে। ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে স্যারের ভিডিও দেখার পর প্রয়োজন হলে জেকে লাইফস্টাইলের প্রধান কার্যালয়, আফতাবনগরে চলে আসুন। এখানে ডা. জাহাঙ্গীর কবীর স্যারের সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও পুষ্টিবিদের সেবা এবং ফিটনেস ট্রেইনারের পরামর্শ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গ্রহণ করতে পারবেন, এবং প্রয়োজনীয় টেস্টগুলোও বিশেষ ডিসকাউন্টে করতে পারবেন। সর্বোপরি এখানে জেকে লাইফস্টাইলের ফলো করতে প্রয়োজনীয় সকল পরামর্শ ও সেবা একই সাথে।